সর্বশেষ

ডলারের দাম বৃদ্ধিতে চাল আমদানিতে সাহস পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ :


২৪খবরবিডি: 'চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক কমানোর পর চার ধাপে তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৯ লাখ টনের বেশি আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। প্রথম দফায় অনুমতি দেওয়ার পর পার হয়েছে দুই সপ্তাহ। তবে চাল আমদানিতে আগ্রহ নেই আমদানিকারকদের। এখন পর্যন্ত আমদানি হয়নি কোনো চাল।'

-আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। তা ছাড়া ভারতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা দাম বেড়েছে। ফলে আমদানি করা চাল বাজারজাত করা পর্যন্ত যে খরচ পড়বে, তা স্থানীয় বাজারের দামের চেয়েও বেশি হবে। আমদানি করলে লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হবে। সে কারণে আমদানিতে আগ্রহ কম তাঁদের।

'এবার ভরা মৌসুমেও চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ২৩ জুন চাল আমদানিতে শুল্ক্ক ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রয়োজনে এর পরিমাণ আরও বাড়ানোর কথা বলেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।'

-খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে চার দফায় ৩২৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৯ লাখ ১০ হাজার টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জুন প্রথম দফায় ৪ লাখ ৯ হাজার টন আমদানির জন্য ৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়। এ সময় মন্ত্রণালয় বলেছিল, এলসি খুলতে হবে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে। ১১ আগস্টের মধ্যে আমদানি করা সেই চাল বাজারজাত করতে হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত এক টনও আমদানি করা হয়নি। দেশে বেসরকারিভাবে যে চাল আমদানি করা হয়, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে। কারণ পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড থেকে আনার সুযোগ থাকলেও পরিবহন ব্যয় ও সময় বেশি লাগে। এ কারণে আমদানিকারকদের পছন্দের তালিকায় প্রথম থাকে ভারত। ভারত থেকে এক সপ্তাহে চাল আমদানি করা সম্ভব।

'আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারত থেকে বিআর-২৮ জাতের চাল আমদানি করলে প্রতি টনের দাম পড়বে ৪৩০ থেকে ৪৩৫ ডলার। কিন্তু এলসি খুলতে গেলে এক ডলারের বিপরীতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৮ টাকা। সেই হিসাবে এক টন চালের দাম দাঁড়াচ্ছে ৪২ হাজার ১৪০ থেকে ৪২ হাজার ৬৩০ টাকা। চাল আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক্ক রয়েছে। এলসি প্রক্রিয়াকরণসহ অন্যান্য খরচ মিলে যা প্রায় ২৭ শতাংশে দাঁড়ায়। সব মিলিয়ে দেশে আসা পর্যন্ত প্রতি কেজি চালের খরচ পড়বে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫৪ টাকা। কিন্তু একই চাল দেশের মিলগেটে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে আমদানি করা চালের কেজিতে খরচ পড়বে মিলগেটের চেয়ে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা বেশি। ফলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আমদানিকারকদের থেকে চাল না কিনে মিল থেকে কিনবেন। অনুমতি নিয়ে রাখলেও এসব চিন্তা করেই অনেকে আমদানিতে আগ্রহী নন।'

ডলারের দাম বৃদ্ধিতে চাল আমদানিতে সাহস পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা

-অনুমতি পাওয়ার পরও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাল আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছেন না বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি শহিদুর রহমান পাটওয়ারী। ২৪খবরবিডিকে তিনি বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংকটে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

'বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি কাওসার আলম খান বলেন, বাংলাদেশ চাল আমদানি করবে এমন তথ্য পেয়ে ভারতের রপ্তানিকারকরা কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা দাম বেশি চাচ্ছেন। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান সাকি বলেন, গত ৫ থেকে ৬ দিনে ভারতে চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। এ কারণে আমদানি করতে চান না অনেকেই।

-খাদ্য মন্ত্রণালয়ের (সরবরাহ ও সংগ্রহ অনুবিভাগের) অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমান ২৪খবরবিডিকে বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ চাল আমদানি করেছেন বলে জানা যায়নি। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এলসি খোলা ও বাজারজাত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমদানি করছেন না কেন কিংবা আমদানিতে কী সমস্যা আছে সেই বিষয়ে কোনো ব্যবসায়ী এখন পর্যন্ত কিছু জানাননি।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত