প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'নতুন ক্যাডারভুক্ত সহকারী প্রকৌশলীর পদ সৃষ্টি হয়েছে গত ৩০ মে। অথচ ২০০৪ সালের ১ জুলাই থেকে ননক্যাডারভুক্ত ৯০ জনকে এ পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বিধিমালা উপেক্ষা করে এমনটি ঘটেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে। এতে যাঁরা আগে থেকেই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাঁরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ।'
-কর্মকর্তারা বলছেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ও সরকারের নিয়োগ বিধিমালা না মেনেই নতুনদের ১৮ বছর আগের তারিখ থেকে এভাবে ক্যাডারভুক্ত করার কারণে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তাঁদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন হয়েছে। বিষয়টি বিসিএস পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে বলছেন, কোনো মহল বিশেষ সুবিধা নিয়ে এ সুযোগ করে দিয়েছে।
-এই ৯০ জনের পদোন্নতির অফিস আদেশে স্বাক্ষরকারী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব একেএম সাইফুল আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় এটা করেছে, নিশ্চয় তাঁরা আইনি বিষয়গুলো দেখেই করেছে। কাজেই এ ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলতে চান না।
'স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সরাসরি পিএসসির মাধ্যমে ক্যাডারভুক্ত সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পভুক্ত কর্মকর্তাদেরও বিভিন্ন সময় রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ক্যাডারভুক্তি করা হয়। সে ক্ষেত্রে রাজস্ব খাতভুক্তির পর থেকে ক্যাডারভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে গত ৩০ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ সংশোধন করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ওই নিয়োগ বিধি সংশোধনের প্রজ্ঞাপনে কোনো ভূতাপেক্ষিক কার্যকারিতার সুযোগ রাখা হয়নি। গত ১ জুন এই নিয়োগ বিধির প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে জারি করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলীর পদ ৫০টি থেকে বাড়িয়ে ২৩৫টি করা হয়। কিন্তু গত ১ জুন জনপ্রশাসনের নিয়োগ বিধির গেজেট হওয়ার দিনই প্রকল্পভুক্ত ৩২ জন ও ৫৮ জন ননক্যাডার কর্মকর্তাকে সরাসরি ক্যাডারভুক্ত করা হয়। তাছাড়া ওই আদেশে তাদের ক্যাডারভুক্তি ২০০৪ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়।'
নিয়োগ বিধিমালা উপেক্ষা,চাকরি স্থায়ী হওয়ার আগেই ৯০ জনকে ক্যাডারভুক্তি'
-বিষয়টি নিয়ে গত ১৯ জুন বিসিএস পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে একটি লিখিত আবেদন করা হয়। এতে ৯০ জনকে ক্যাডারভুক্ত করার প্রজ্ঞাপন সংশোধনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি বিলকিস আকতার ও সাধারণ সম্পাদক ইবনে মায়াজ প্রমাণিক স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে ক্যাডার পদ সৃজনের আগেই অস্তিত্ববিহীন ক্যাডার পদে ভূতাপেক্ষভাবে ৯০ জন সহকারী প্রকৌশলীর ক্যাডারভুক্তির বিষয়টি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রকৌশল জনস্বাস্থ্য) গঠন ও ক্যাডার বিধিমালা ১৯৮০-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্যাডারভুক্ত পদের দুই-তৃতীয়াংশ সরাসরি নিয়োগেরও বিধান আছে। এভাবে ৯০ জনকে ভূতাপেক্ষ নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুপারিশ কখনও বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় করেনি।
'নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক প্রকৌশলী জানান, রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির তারিখের ১৮ বছর আগে থেকে ওই ৯০ জনকে ক্যাডারভুক্ত করায় অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ অনেকে জ্যেষ্ঠতায় পিছিয়ে পড়েছেন। এতে তীব্র অসন্তোষ ও হতাশা বিরাজ করছে। আরেকজন প্রকৌশলী বলেন, এই অস্বাভাবিক ক্যাডারভুক্তির পেছনে কোনো মহল বা ব্যক্তি বড় ধরনের সুবিধা পেয়েছেন। নিয়মকানুন অবজ্ঞা করে এমনটা করায় দপ্তরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।'